সিলেট ভ্রমণ গাইড / সিলেট সফরনামা

সিলেট ভ্রমণ গাইড / সিলেট সফরনামা

সিলেট ভ্রমণ গাইড

 সিলেট ভ্রমণ গাইড / সিলেট সফরনামা

➤ যেভাবে যেতে হয়: ঢাকা < সিলেট কদমতলী স্টেশন < দরগাহ গেট/জিন্দাবাজার। 

➤ কোথায় থাকা যায়: দরগাহ গেইট (হোটেল আজমির/হোটেল পায়রা/হোটেল আবু হামজা)। জিন্দাবাজার (হোটেল নুরজাহান)। প্রতিদিন বিভিন্ন স্পট ঘুরে শহরে ব্যাক করাটাই ভাল।

➤ কোথায় খাওয়া যায়: পাঁচভাই রেস্টুরেন্ট/পানসী রেস্টুরেন্ট। জিন্দাবাজার। 

সিলেটের কোথায় কোথায় ঘুরা যায়:

মালনীছড়া ও লাক্কাতুরা চা-বাগান, রাতারগুল

সিলেট সফরের ১ম দিন

প্রথমে আমরা মালনীছড়ালাক্কাতুরা চা-বাগান দুটি ঘুরে দেখি। এগুলো শহরের পাশেই। এরপর চলে যাই রাতারগুল এর উদ্দেশ্যে। নৌকাঘাট পর্যন্ত সিএনজিতে গিয়েছি। ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া করে ঘুরেছি রাতারগুল জলাভূমি বন। মন ঝুড়ানো দৃশ্য পাবেন এখানে। পানি ও গাছপালা যেন এখানে একাকার হয়ে আছে। 

লালাখাল, জাফলং জিরো পয়েন্ট, সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা

সিলেট সফরের ২য় দিন

সিলেট দরগাহ গেট থেকে  রিক্সা নিয়ে চলে যান সোবাহানি ঘাট। ভাড়া ৫০ টাকা। এরপর জাফলংগামী বাসে উঠে যান। ৭০ টাকা ভাড়ায় নেমে পড়ুন সারিঘাট বাস স্টপে। সারিঘাট বাস স্টপ ২ টা, একটা ব্রিজের এপারে, আরেকটা ওপারে। মনে রাখবেন সিলেটের দিক থেকে যাওয়ার পথে ব্রিজ ক্রস করে ওপারের স্টপে নামবেন। না হয় অনেকক্ষণ হাটতে হবে। দরগাহগেইট থেকে সারিঘাট সিএনজি রিজার্ভ নিয়েও যেতে পারেন। 

সেখান থেকে অটো রিজার্ভ নিয়ে চলে যান লালাখাল। ভাড়া ১২০ টাকা, ৬ জন বসা যায়। লোকালও যায়। লোকাল প্রতিজন ২০ টাকা করে। সিরিয়ালের অটো। যাত্রী ভরার পরে ছাড়ে। একটা পাওয়ার ট্রলার নিয়ে ঘুরে আসুন লালাখাল জিরো পয়েন্ট। ট্রলারটা স্পিডবোট টাইপের, আসলে স্পিডবোট নয়। ভাড়া ঠিক করে নিবেন। আমরা দুইজন ৭০০ টাকা দিয়ে ভাড়া করেছিলাম। 

এখানে দেখতে পাবেন লালাখালের নীল পানি, জিরো পয়েন্ট আর পাহাড়ের চা বাগান। পাহাড়ের উপরে উঠলে ভারতের দিকে অসম্ভব সুন্দর পাহাড়ের চিত্র দেখতে পারবেন। 

লালাখাল থেকে চলে যাবেন জৈন্তাপুর সিএনজিতে। ভাড়া ৩০ টাকা করে। জৈন্তাপুর থেকে জাফলংগামী বাসে উঠবেন। ভাড়া ৩০ টাকা করে। বাস থেকে নেমে আমরা আজকে জাফলং থাকার পরিকল্পনা করি। আমরা এখানে হোটেল গার্ডেনে রুম ভাড়া নেই। দুই বেড ৭০০ টাকা। বাসায় কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে অটোরিকশায় জাফলং জিরোপয়েন্ট চলে যাই। ভাড়া ২০ টাকা প্রতিজন। জিরোপয়েন্ট ঘুরে নৌকায় পার হয়ে চলে যাই সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণায়। এটি জিরোপয়েন্টের পাশেই। নৌকায় ভাড়া প্রতিজন ৫০/১০০ করে পড়বে। এপর্যায়ে আজকের দিন শেষ হয়ে যায়।  আমরা হোটেলে ফিরে আসি। 


পান্থুমাই ঝর্ণা, লক্ষণছড়া, কুলুমছড়া ও বিছনাকান্দি

সিলেট সফরের ৩য় দিন

জাফলং থেকে ধারাবাহিকভাবে এই স্থানগুলো:

পান্থুমাই ঝর্ণা < লক্ষণছড়া < কুলুমছড়া ঝর্ণা < বিছনাকান্দি

আমরা রাতে জাফলং ছিলাম। সকালে উঠে পান্থুমাই ঝর্ণা < লক্ষণছড়া < কুলুমছড়া ঝর্ণা < বিছনাকান্দি যাওয়ার জন্য বের হয়ে যাই। আমরা এই জায়গাগুলোতে গিয়েছিলাম ভিন্ন পথ দিয়ে। একদমই গ্রাম্য কাঁচাপাকা রাস্তা হয়ে। বেশিরভাগ পথই আমাদের হাঁটতে হয়েছে।

প্রথমে আমরা জাফলং মামার বাজার থেকে অটোতে ১০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে চলে যাই বল্লাঘাট। সেখান থেকে ১০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে নৌকায় নদী পার হয়ে চলে যাই লন্ডনি বাজার। 

সেখান থেকে ২০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে অটোরিকশায় চলে যাই হাজিপুর। হাজিপুর থেকে আবার ১০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে নৌকায় নদী পার হয়ে পায়ে হেঁটে চলে যাই দক্ষিণ পান্থুমাই। 

মাঝে বার বার আমরা স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসা করে রাস্তা জেনে নিয়েছিলাম। 

দক্ষিণ পান্থুমাই থেকে জিজ্ঞাসা করে করে চলে যাই একদম পান্থুমাই ঝর্ণা। কিছুসময় দাঁড়িয়ে ঝর্ণাটা উপভোগ করলাম। 

পান্থুমাই থেকে আমরা চলে যাব লক্ষণছড়া। সে জন্য ১০০ টাকা দিয়ে বাইকে চলে যাই ইসলামাবাদ। 

ইসলামাবাদ থেকে লক্ষণছড়ার পথ জিজ্ঞাসা করে করে পায়ে হেঁটে সামনে এগিয়ে যাই। কিছুদূর যাওয়ার পর ১০ টাকা দিয়ে নৌকায় নদী পার হই। নদী পার হয়ে জিজ্ঞাসা করতে করতে পায়ে হেঁটে চলে যাই একদম লক্ষণছড়া। লক্ষণছড়া জায়গাটা আমার অসম্ভব সুন্দর লেগেছে। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পর্যটকরা এখানে আসে না। সেখানে আমরা কিছুসময় পাথুরে পানির স্রোতে হাঁটাহাঁটি করলাম। বিজিবির সাথে আমাদের দেখা হলো। কথা হলো। 

লক্ষণছড়া দেখা শেষ করে আমরা আবার পায়ে হেঁটে চলতে শুরু করি কুলুমছড়াঝর্ণা অভিমুখে। হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যাই কুলুমছড়া_ঝর্ণা। এটার বেশিরভাগটাই ইন্ডিয়ার সীমানায় হওয়ায় বিএসএফ এর ভয়ে সামনে না এগিয়ে দূর থেকে কিছু সময় খাল বেয়ে ঝর্ণার পানি নেমে যাওয়ার দৃশ্য উপভোগ করলাম। 

এখান থেকে আবার হাঁটা শুরু করি। এবার যাব বিছনাকান্দি। পথ জিজ্ঞাসা করে করে আমরা হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যাই বিছনাকান্দি। বিছনাকান্দিতে বেশ কিছু সময় পাথর ও পানির সাথে যুদ্ধ করে আনন্দ করলাম। 

বিছনাকান্দি থেকেও পায়ে হেঁটে তুরংছড়াউৎমাছড়া যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। তবে আমার সফরসঙ্গী আর হাঁটতে রাজি না হওয়ায় সেটা আর হলো না। তাই আমরা বিছনাকান্দি থেকে হাঁদারপাড় হয়ে সিলেট শহরে চলে আসি। 

এই পুরো সফরে আমাদের সময় লেগেছে আট ঘণ্টা। সকাল ৭ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত। মাঝে বিভিন্ন গ্রাম ও দোকান-পাটে বসে বিশ্রাম নিয়েছি। নাস্তা করেছি। স্পটগুলোতে কিছু সময় কাটিয়েছি। এই দীর্ঘ পথ হেঁটে সফর করলেও আমি কোন ক্লান্তি অনুভব করিনি। ক্লান্তি আসার কোন কারণও নেই। কারণ, এই পথটা ছিল খুবই মুগ্ধময় একটি পথ। বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া সীমানা দিয়ে যাচ্ছিলাম। তাই একই সাথে দুই দেশ দেখার একটা স্বাদ পাচ্ছিলাম। আমাদের সাথে ছিল পাহাড়, পাহাড়ের উপর দিয়ে বয়ে চলা মেঘ, পাহাড়ের গাত্র বেয়ে নেমে আসা ঝর্ণার পানি, গ্রামের মেঠো পথ, পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার আনন্দ। সব মিলিয়ে যেন একটি স্বর্গীয় সফর। কখন যে সময় ও পথ শেষ হয়ে গেছে তা বুঝতেই পারিনি।

রাতে থাকার জন্য পাঁচভাই রেস্টুরেন্টের বিপরীতে হোটেল নূর জাহানে রুম ভাড়া করি। ভাড়া ৫০০ টাকা। সন্ধ্যায় গিয়েছিলাম হযরত শাহ জালাল রহ. এর মাযার। মাযার যিয়ারত ও আশপাশের সবকিছু দেখে বাসায় ফিরে আসি।

প্রথম দিনেই মাযার যিয়ারতের সিদ্ধান্ত ছিল। তবে, বিভিন্ন কারণে হয়ে উঠেনি। 

আজকের সফর এগানেই শেষ হয়ে যায়। 

ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, হযরত শাহ পরান রহ. এর মাজার

সিলেট সফরের ৪র্থ দিন

৪র্থ দিন প্রথমে চলে যাই হযরত_শাহ_পরান রহ. এর মাযার যিয়ারতে। বন্দর বাজার থেকে ত্রিশ টাকা করে ভাড়ায় সিএনজিতে চলে যাই মাযার গেট। সেখান থেকে ১০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে একদম মাযারের কাছে গিয়ে নেমে পড়ি। এরপর মাযার যিয়ারত করে ফিরে আসি হোটেলে। 

হোটেল থেকে বের হয়ে চলে যাই সিলেট শহরের আম্বরখানা পয়েন্ট। সেখান থেকে ১০০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে সিএনজিতে চলে যাই ভোলাগঞ্জ। বাসেও যাওয়া যায়। ভাড়া ৭৫ টাকা করে। সেখান থেকে জনপ্রতি যাওয়া-আসা ১০০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে নৌকায় চলে যাই সাদা পাথর। এখানে রয়েছে বিভিনা রঙ্গের পাথর, ঝর্ণা থেকে নেমে আসা পানির স্রোত, পাহাড়, মেঘ ও পাহাড়ি ঝোঁপঝাড়। এখানে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় ব্যয় করে ফিরে আসি ভোলাগঞ্জ বাজার। ভোলাগঞ্জ থেকে বাসে চলে আসি সিলেট শহর। 

জাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান, বারিকটিলা, লাকমাছড়া, নীলাদ্রি লেক ও রাজাই ঝর্ণা 

৫ম দিন- সুনামগঞ্জ

সিলেট শহরের আম্বরখানা থেকে ২০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে আমরা চলে কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে ১০০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে বাসে চলে যাই সরাসরি সুনামগঞ্জ নতুন বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে ৩০ টাকা রিক্সা ভাড়া দিয়ে চলে যাই পুরাতন বাসস্ট্যান্ড। এখানে থাকার কিছু হোটেল আছে। আমরা উঠি নিউ প্যালেস হোটেলে। ডাবল বেডরুমে ভাড়া নিয়েছিল ৮০০ টাকা। ভোড়ে ঘুম থেকে উঠে ফজর পড়ে ভ্রমণের জন্য বের হয়ে পড়ি। ৪০ টাকা রিক্সা ভাড়া দিয়ে চলে যাই সুরমা ব্রিজে। রাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। যাওয়ার কথা ছিল বাইক নিয়ে। তবে, বৃষ্টি থাকায় বাইকে আর যাওয়া হলো না। বিকল্প হিসেবে বেছে নিলাম সিএনজি। তবে, সিএনজির স্বাভাবিক ভাড়া ১২০ টাকা। কিন্তু, গ্যাস সাপ্লাই নাই, পেট্রোল দিয়ে চালাতে হবে অজুহাত দেখিয়ে ভাড়া চেয়ে বসল ২০০ টাকা প্রতিজন। গতান্তর না পেয়ে সিএনজিতেই উঠে পড়লাম। সিএনজিতে পৌঁছে গেলাম লাউড়ের_গড়। কিন্তু, বৃষ্টি আর থামল না। দুপুর প্রায় ১১ টা পর্যন্তই বৃষ্টি চলতেই থাকল। এদিকে সময় তো আর থেমে নেই। তাই, ছাতা কিনে বৃষ্টির মধ্যেই ঘুরার জন্য বের হয়ে পড়লাম। লাউড়েরগড় থেকে নৌকায় ১০ টাকা করে ভাড়ায় জাদুকাটা_নদী পার হলাম। নদীর ওপারেই শিমুল_বাগান। বিরাট শিমুল বাগান। সেখানে কিছু সময় ঘুরাঘুরি করে আবার নৌকায় ১০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে জাদুকাটা নদীর অপর প্রান্ত পার হলাম। পার হয়ে চলে গেলাম বারিকের_টিলা। #বারিক_টিলায় আপনার জন্য অপেক্ষা করছে মন শীতল করে দেয়া অসাধারণ সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। পাহাড়, ঝর্ণা, নদী, মেঘ, পাহাড়ের সবুজ গাছপালা-লতাপাতা সব মিলিয়ে যেন একটা স্বর্গীয় পরিবেশ। টিলায় উঠে নদী ও পাহাড়ের দিকে দৃষ্টি দিলে আপনি আপনার দৃষ্টি আর ফিরাতে পারবেন না। কিন্তু, সময় তো হাতে নেই। আবার যে আমাদের ফিরতে হবে ঢাকায়। তাই সেখানে বেশিক্ষণ অবস্থান করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হলো না। বারিকের টিলা হতে আমরা পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে নিচে নামলাম। সেখান থেকে ৩৫০ টাকা দিয়ে একটা অটোরিক্সা ভাড়া করলাম। যেটা আমাদেরকে প্রথমে নিয়ে গেল একদম লাকমাছড়া_ঝর্ণা। লাকমাছড়া ঝর্ণা দেখে ফিরতি পথে চলে আসলাম নীলাদ্রি লেকে। এখানের পাহাড়ে রয়েছে বিরাট বিরাট পাথর। হাতে সময় কম থাকায় খুব অল্প সময় এখানে থেকেছিলাম। তারপর চলে গেলাম রাজাই ঝর্ণায়। ঝর্ণাটায় পানির স্রোত অত্যধিক। বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে ঝর্ণাটার অবস্থান। কিছু সময় পানির স্রোত উপভোগ করে আবার চলে আসলাম বারিকের টিলায়। টিলা হতে নেমে ঘাট থেকে ১০ টাকা করে নৌকা ভাড়া দিয়ে নদী পার হলাম। এখন আমাদের সুনামগঞ্জ ফেরার পালা। ফেরার পথে সুনামগঞ্জ যাওয়ার জন্য ৩০০ টাকা দিয়ে বাইক ভাড়া করলাম। বাইকে করে প্রথমে চলে গেলাম আমরা শাহ_আরেফীনের_মাজার। মাজার ও মাজারের পাশের পাহাড়ের দৃশ্যগুলো দেখে লাউড়েরগড় হয়ে ছুটে চললাম সুনামগঞ্জের দিকে। বিকেল ৫ টার দিকে সুনামগঞ্জ পৌঁছে গেলাম। সেখান থেকে চলে আসলাম নতুন বাস স্ট্যান্ড। সেখান থেকে ১০০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে চলে আসলাম সিলেট শহর। শহর থেকে চলে গেলাম সিলেট রেলস্টেশন। আমরা আগেই টিকেট কেটে রেখেছিলাম। রাত ১১:৩০ মিনিটে ট্রেন ছুটে চলল ঢাকার উদ্দেশ্যে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টার দিকে আমরা পৌঁছে গেলাম কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন। এরই মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো আমাদের দীর্ঘ ৫ দিনব্যাপী সিলেট ও সুনামগঞ্জ সফর।

فلله الحمد كله

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url